

স্থানীয়দের অভিযোগ, উখিয়ায় গত কয়েক বছরের মধ্যে অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছে কিছু যুবক। তাদের অনেকে সময়ে-অসময়ে পুলিশের হাতে লোক দেখানো গ্রেপ্তার হলেও মাদক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ ঠিকই তাদের হাতেই থেকে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মাদক নেটওয়ার্কের শিকড় এখন আরও গভীরে পৌঁছে গেছে। বিভিন্ন বাজার, গ্রাম ও পাহাড়ি এলাকার নির্দিষ্ট কিছু পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারে যুক্ত। কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও জামিনে বের হয়ে আবারো পুরোদমে সেই পুরনো ব্যবসায় ফিরে যায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি, প্রভাবশালী মহল এমনকি কিছু ব্যবসায়ী পর্যন্ত এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িতÑএমন অভিযোগ বহুদিনের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিছু মাদক কারবারি এখন ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে তাদের অবৈধ অর্থ সাদা করার কাজ চালাচ্ছে। উখিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র কুতুপালং বাজারে এখন মাদক বাণিজ্যের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। বাজার কমিটির অনেক সদস্য ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। মোবাইল, কাপড়, ফার্মেসি ও ইলেকট্রনিকস দোকানের আড়ালে গোপনে চলছে মাদক বিক্রি। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই বাজারে রোহিঙ্গা গডফাদারদের নেতৃত্বে সক্রিয় হয়ে ওঠে মাদকচক্র। বনবিভাগের জায়গার ওপর গড়ে ওঠা এই বাজারটি এখন মাদক ব্যবসার টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
কুতুপালং এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এখানে রোহিঙ্গা গডফাদারদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। বাজারের অনেকেরই দামি গাড়ি ও বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। তবে বড় নেটওয়ার্ককে ধরতে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে সময় লাগছে। পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সীমান্ত এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নজরদারি বাড়ানো গেলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল হক বলেন, সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে আমরা মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছি। কারা কারা মাদকের সঙ্গে জড়িত তা খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। মাদকের বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

পাঠকের মতামত